অজন্তা গুহা, মহারাষ্ট্র, ভারত - Bangladesh Travelar

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, June 12, 2018

অজন্তা গুহা, মহারাষ্ট্র, ভারত





আর্কিওলজি নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে, তাঁরা বেড়িয়ে আসতে পারেন অজন্তা গুহা থেকে। দুই হাজার বছরের পুরনো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আসবেন। জায়গাটা ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে, মুম্বাই থেকে দূরত্ব প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার, আর আওরঙ্গবাদ শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার।
ইংরেজি U আকৃতির পাহাড়ের ধার কেটে কেটে অনেকগুলো গুহা নির্মাণ করা হয়েছে। অধিকাংশই মূলত বৌদ্ধদের মন্দির। গুহাগুলো দুই ফেজে নির্মিত হয়, কিছু গুহা খ্রীস্টপূর্ব ২০০ অব্দ থেকে ১০০ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে, বাকিগুলো ৪০০ থেকে ৬৫০ খ্রীস্টাব্দের দিকে। এক পর্যায়ে গুহাগুলো ঘন জঙ্গলের মধ্যে হারিয়েই যায়। মধ্যযুগে বহু শতাব্দী ধরে এগুলো কেবলমাত্র মানুষের মুখে মুখে কিংবদন্তী হয়েই টিকে ছিল, যার বাস্তব অস্তিত্ব নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন। অবশেষে ১৮১৯ খ্রীস্টাব্দে এক ব্রিটিশ ভদ্রলোক জঙ্গলে বাঘ শিকার করতে গিয়ে ‘অ্যাকসিডেন্টালি’ গুহাগুলো পুনরাবিষ্কার করে ফেলেন! গুহাগুলোর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এর প্রতিটা দেয়াল, প্রতিটা খিলান সূক্ষ্ণ কারুকার্যমণ্ডিত। দুই হাজার বছরেরও বেশি পুরনো পেইন্টিংগুলো গুহার দেয়ালে এখনও শোভা পাচ্ছে!
যেভাবে যাবেনঃ
অজন্তা গুহার কাছাকাছি কোন শহর থেকে গেলে প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে চলে যেতে পারেন। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট আছে কিনা ঠিক জানা নাই। মূল সাইটে প্রবেশের ৩/৪ কিলোমিটার আগেই গাড়ি থেকে নেমে যেতে হবে। যেখানে নামবেন সেখানে পার্কিং এর ব্যবস্থা আছে। নামার পর সেখান থেকে ইন্টারনাল বাস সার্ভিস (এসি এবং নন এসি) আছে যা কিছুক্ষণ পরপরই ছেড়ে যায়। এই বাস আপনাকে পাহাড়ি পথে মূল সাইটের প্রবেশমুখ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। সময় লাগবে ১০/১৫ মিনিটের মত। ভাড়া নন এসিতে যতদূর মনে পড়ে ১৮ কিংবা ২২ রুপি (শুধু যাওয়ার ভাড়া)। একদম আমাদের দেশের লোকাল বাসের মত বাস। সিট না পেলে দাঁড়িয়েও যেতে পারবেন, তবে পকেট সাবধান! এসিতে ভাড়া খুব সম্ভবত ৪০ রুপির মত। আসার সময়ও এই বাস দিয়েই পার্কিং লট পর্যন্ত আসতে হবে।
অজন্তা গুহায় প্রবেশের প্রবেশ ফি ভারতীয়, সার্কভুক্ত এবং বিমস্টেক এর সদস্যভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৩০ রুপি, অন্য ফরেনারদের জন্য ৫০০ রুপি। তাই বাংলাদেশী হিসেবে ৩০ রুপিতে টিকেট কাটলে অনেক সময় পাসপোর্ট দেখতে চায়। টিকেট কাটার পর টিকেটখানা ফেলে দেবেন না, যত্ন করে সাথে রাখুন। অনেক ভেতরের একটা গেটে টিকেট চেকিং হয়।
সতর্কতাঃ
১। মন্দিরের ভেতরে অবশ্যই জুতা খুলে প্রবেশ করবেন।
২। মন্দিরের ভেতরে ছবি উঠানোর ক্ষেত্রে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
৩। বর্ষাকালে হাঁটার পথগুলো অনেক পিচ্ছিল হয়, হাঁটার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন, নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাইরে যাবেন না।
৪। গুহার প্রবেশমুখে অনেকগুলো স্যুভনিরের দোকান আছে। যাওয়ার সময় এবং বিশেষ করে ফিরতি পথে এইসব দোকানের লোকজন আপনাকে পঙ্গপালের মত ছেঁকে ধরবে, তাদের দোকান থেকে কিছু কেনার জন্য। তবে স্যুভনির কেনার ক্ষেত্রে ঠিকমত দামাদামি করে নেবেন, কেননা যেই প্রডাক্ট ১০০০/১২০০ রুপি দাম চাইছে, দামাদামির পর দেখা যায় তা ১৫০/২০০ রুপিতেই দিয়ে দিচ্ছে।
৫। জায়গাটা অনেক পরিচ্ছন্ন, অনুগ্রহপূর্বক এর পরিচ্ছন্নতা নষ্ট করবেন না।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here